আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আসাদুজ্জামান।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন সিনিয়র সহকারী সচিব নিলুফা ইয়সমিন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তজার্তিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আইন, ২০১০ এর ধারা–১০(১) ও ১০(২) অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আসাদুজ্জামান–কে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে কর্ম–সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী ২ (দুই) বছর মেয়াদে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট এর পরিচালক পদে নিয়োগ প্রদান করা হলো।
এই নিয়োগের অন্যান্য শর্ত অনুমোদিত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামানের জন্ম ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দের ১ সেপ্টেম্বর-টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার বেড়াডাকুরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মুহাম্মদ আজিজুল হক এবং মাতা হাওয়া বেগমের পাঁচ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ। দড়িসয়া প্রাথমিক স্কুল থেকে প্রাথমিক এবং পানকাতা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে এসএসসি, সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে বোর্ড বৃত্তিসহ উচ্চ মাধ্যমিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ভাষাবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্সে প্রথম স্থান লাভ করেন।
২০০৪ খ্রিস্টাব্দে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু, ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১ এপ্রিল ২০২১ খ্রিস্টাব্দে ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। বর্তমানে এ বিভাগের অধ্যাপক।
লেখালেখিতেও তিনি সিদ্ধহস্ত। প্রকাশিত হয়েছে ১৭টি গ্রন্থ-১৩টি পাঠ্যবই, চারটি সৃজনশীল গ্রন্থ এবং ৩০টি গবেষণা প্রবন্ধ শিক্ষার্থী ও পাঠকদের মাঝে সমাদৃত হয়েছে।
জাতীয়, আন্তর্জাতিক, ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে লিখেছেন অসংখ্য প্রবন্ধ ও নিবন্ধ। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ-শুদ্ধিকরণ, বাগধারা-বাগবিধি, প্রবাদ প্রবচন, অনুবাদের ইতিবৃত্ত, রবীন্দ্রনাথ: চতুর্থ দশ বছর, ভাষাদর্শনের ইতিবৃত্ত, আধুনিক শৈলীবিজ্ঞান ও সাহিত্যবিচার, ধ্বনিবিজ্ঞান ও ভাষাতত্ত্ব, এসএসসি প্রোগ্রাম বাংলা দ্বিতীয়পত্র, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, জোতির্ময় বাংলা সংস্কৃতি, প্রমিত বাংলা ভাষা, ভাষা ও সংস্কৃতি। সৃজনশীল গ্রন্থের মধ্যে-কাব্যগ্রন্থ-ভালোবাসার লালটিপ (কথা প্রকাশ, ২০১৯), গল্পের বই- ভালোবাসার গল্প (অন্যপ্রকাশ, ২০২০), উপন্যাস-একটি হত্যা এবং অতঃপর (চন্দ্রছাপ, ২০২২)। তিনি মোট ২৭টি গান রচনা করেছেন। সম্পাদনা গ্রন্থের সংখ্যা চারটি।
তিনি ছায়ানীড় সংবর্ধিত গুণিজন-২০১৮, ছায়ানীড় ভাষাতাত্ত্বিক উৎকর্ষ সম্মাননা-২০১৯, ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ শিক্ষাবিদ সবংর্ধনা-২০২১ সহ নানাবিধ পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন।
তিনি দেশে-বিদেশের বিভিন্ন কনফারেন্স ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন। ভ্রমণ করেছেন নানা দেশ। বিভিন্ন সামাজিক ও সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।