ই-পেপার বাংলা কনভার্টার বৃহস্পতিবার ● ১০ অক্টোবর ২০২৪ ২৪ আশ্বিন ১৪৩১
ই-পেপার বৃহস্পতিবার ● ১০ অক্টোবর ২০২৪
Select Year: 
শিরোনাম:




সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ ও এমপি শাহ আলম রিমান্ডে
আদালত প্রতিবেদক
প্রকাশ: রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬:৩৮ পিএম  (ভিজিটর : ২০৬)
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যার ঘটনায় করা পৃথক দুই মামলায় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের পাঁচ ও বরিশাল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ আলম তালুকদারের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকার পৃথক দুই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন৷ 

এদিন রাজধানীর আদাবর থানার গার্মেন্টস কর্মী রুবেল হত্যা মামলায় ফরহাদ হোসেনের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে উপস্থিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যাহ তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানিকালে হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন ফরহাদ হোসেন। এর আগে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে ফরহাদ হোসেনকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরে তাকে আদাবর থানায় হস্তান্তর করা হয়। 

গতকাল রিমান্ড শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে বিএনপিপন্থী আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী উল্লেখ করেন, আন্দোলনকারীদের বাসা থেকে ধরে এনে গুম-খুন করতে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ফরহাদ হোসেনকে আগে রাজনীতিতে দেখিনি, নাম শুনিনি। হাসিনা সরকারের অবৈধ এমপি তিনি, পরে মন্ত্রী হন। জেনেছি টাকা দিয়ে মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন তিনি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় জঘন্য কাজ করেছেন ফরহাদ। একদিন, দুইদিন, তিনদিন এভাবে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। কারণ স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে আন্দোলনকারীরা বাসায় থাকবে। বাসা থেকে ধরে এনে তাদের গুম, হত্যা করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, এই ফরহাদ হোসেন ডিসি ও ইউএনও-দের নির্দেশ দেন আন্দোলনকারীদের ঠিকানা খুঁজে বের করতে। আন্দোলন দমাতে হত্যা, গণহত্যারও নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার বানানোর পিছে এদের ভ‚মিকা রয়েছে। ক্ষমতা, মন্ত্রিত্বের লোভ, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করতে হাসিনাকে তারা স্বৈরাচার বানিয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, তাদের ঘরে কি সন্তান নাই? গুলি করতে বুক, হাত কাঁপলো না। এদের উসকানি ও নির্দেশ ছিলো গুলি করার। এদের জনগণের আদালতে, জনগণের সামনে বিচার করা উচিত। এতো অপকর্ম করেও এরা হাসে। উল্লেখযোগ্য যেসব আসামিরা শাস্তির আওতায় আসবে তাদের মধ্যে ফরহাদ হোসেন একজন। 

এসময় ফরহাদ হোসেনের আইনজীবী জসীম উদ্দিন সরকার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, ফরহাদ হোসেন স্বনামধন্য সিটি কলেজের প্রফেসর। সুনামের সাথে, দক্ষতার সাথে মন্ত্রণালয় চালিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। ঘটনাস্থল থেকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি। ঘটনার অনেকদিন পরে মামলা। তিনি প্রতিহিংসার শিকার। রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা করছি। শুনানি শেষে আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। 

ফরহাদকে রিমান্ডে নেয়া রুবেল হত্যা মামলার সূত্রে জানা যায়, ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট রুবেলসহ কয়েকশ ছাত্র-জনতা বেলা ১১টার দিকে আদাবর থানার রিংরোড এলাকায় প্রতিবাদী মিছিল বের করে। এসময় পুলিশ, আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গুলি চালায়। এতে রুবেল গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাকে নিকটস্থ একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ২২ আগস্ট আদাবর থানায় মামলাটি করেন রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম। মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, সাকিব আল হাসানসহ ১৫৬ জন আসামি রয়েছেন। অজ্ঞাত আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।


এদিকে ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী মো. নাইমুর রহমানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় বরিশাল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহে আলম তালুকদারের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই রাজু আহমেদ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বরিশাল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম তালুকদারকে আটক করে পুলিশে দেন জনতা।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভিকটিম মো. নাইমুর রহমান (২২) গুলশান ডিগ্রি কলেজের একজন ছাত্র ছিলেন। গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলশান থানাধীন শাহাজাদপুর মেইন রোডস্থ সুবাস্তু নজর ভ্যালি শপিংমলের সামনে অবস্থান করে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আন্দোলন করতে থাকেন। বিকেল ৪টার পর ৪০০ থেকে ৫০০ জন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগসহ অওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী আন্দোলনকারীদের অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়ে। এ সময় তাদের ছোড়া গুলিতে অনেক আন্দোলনকারী ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাকে বাড্ডা এএমজেড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হলে তিনি সেখানে মৃত্যুবরণ করেন। 

এ ঘটনায় নিহতের বাবা খলিলুর রহমান গুলশান থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৬৪ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়, সাবেক চিফ হুইফ নুরে আলম চৌধুরী লিটন, সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান, সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, সাবেক তথ্য ও স¤প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক এমপি নুর মোহাম্মদ।







সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]