কুলাউড়ার রাঙ্গীছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার এক বছরের মাথায় ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। ভবনটির বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। একাধিক স্থানে পলেস্তারা পড়ে যাওয়ায় ও ফাটল দেখা দেওয়ায় আতংকে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে গেছে। আতংক নিয়েই চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেয়। নির্মাণ কাজের দুই বছরের মাথায় ভবনের এই দশা দেখে ক্ষুব্ধ সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ, অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিষয়টি লিখিতভাবে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন।
জানা যায়, চাহিদা ভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের (১ম পর্যায়) আওতায় ২০২১- ২০২২ অর্থ বছরে ৮২ লক্ষ ২৫ হাজার ৩১২ টাকা ব্যায়ে শ্রীমঙ্গলের মেসার্স সেলিম কনস্ট্রাকশন নামীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওই বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ পায়। তড়িঘড়ি করে নির্মাণ কাজ শেষ করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যালয়ের ভবনটি কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। স্থান সংকুলান হওয়ায় বছর খানেক থেকে নতুন ভবনের নিচতলায় দুটি ক্লাসরুম ও একটিতে অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশীল চন্দ্র দাস জানান, পলেস্তারা পড়ার বিষয়টি শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের অবগত করেন। প্রায় দুইশো ছাত্র- ছাত্রী এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদ্য বিদায়ী সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ে অনেক প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি চারতলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন পাই। কিন্তু কাজ শেষ হতে না হতেই নানা জায়গায় ফাটল ও পলেস্তারা পড়ে যাওয়াটা বলে দেয় কাজে কতটা অনিয়ম হয়েছে। আরও একাধিক স্থানে ত্রুটি রয়েছে।
অভিভাবক বদরুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, আজির মিয়া, ধনরাজ, চন্দ্র সাগর গোয়ালা, আকলিমা বেগম, রহিম মিয়া বলেন, বাচ্চারা অনেক আগ্রহ নিয়ে স্কুলে আসতো। পলেস্তারা পড়ার বিষয়টি জানার পর থেকে তাদের মধ্যে ভয় কাজ করছে। স্কুলে আসতে চায় না। এ অবস্থায় বাচ্চাকে স্কুলে পাঠিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলতে পারি না।
শিক্ষক শামীম উদ্দিন আহমদ বলেন, ২য় প্রান্তিক মূল্যায়নের কারণে কিছু শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে আসছে। সবাই আতংকে থাকি, ‘কখন উপর থেকে কিছু খসে পড়ে’। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সালাম, অভিভাবক সত্য নাইডুসহ অনেকেই কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। সংশ্লিষ্টরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন দ্রুত পুরনো ভবনের পলেস্তার নতুনভাবে করা এবং অন্য অসঙ্গতি নিরসন না করলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইফতেখায়ের হোসেন ভ‚ঞা বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানিয়েছি। আশাবাদী দ্রæত নিরসন করা হবে।
কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন আনোয়ার বলেন, বিষয়টি জানার সাথে সরেজমিন দেখেছি। দ্রুত মেরামত করা হবে।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে বিষয়টির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।