প্রকাশ: শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১২:৩২ পিএম আপডেট: ১৪.০৯.২০২৪ ২:০৭ পিএম (ভিজিটর : ১৩৬)
যানজট নিরসনে গত মহাজোট সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের ছয় বছরের মাথায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে গাড়ি পারাপারের আন্ডারপাস নির্মাণ প্রকল্প নেয়া হয়। এটি বাস্তবায়নে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে। কিন্তু গত দশবছরেও এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। তৎকালীন সরকারের মনিটরিংয়ের অভাবে এভাবে একের পর এক প্রকল্প গ্রহণের পরেও বাস্তবায়ন হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানী যানজট নিরসনে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। যদিও যানজট নিরসনে আরো একাধিক প্রকল্প নেয়া হয়েছে এর মধ্যে কয়েকটি বাস্তবায়ন হলেও এ প্রকল্পটি এখনো আলোর মুখ দেখেনি। মূলত যানজট দূর করতে ২০১৪ সালে নগরীর দশটি পয়েন্টে গাড়ি পারাপারের জন্য মাটির নিচ দিয়ে (ভেহিকুলার) আন্ডারপাস নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তৎকালীন সরকার। কিন্তু গত দশ বছরেও এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে অর্থ সংকটসহ নানা জটিলতায় এর কার্যক্রম শুরু করা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীতে যানবাহন সড়কের একপাশ দিয়ে আরেক পাশে যাওয়ার সময় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে এ সমস্যা নিরসনে ২০১৪ সালে গাড়ি পারাপারের জন্য আন্ডারপাস নির্মাণে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় এ সংকট নিরসন হচ্ছে না।
জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় এ দশটির বাহিরেও পর্যায়ক্রমে আরো একাধিক পয়েন্টে এ আন্ডারপাস স্থাপন করার কথা ছিল। এ আন্ডারপাস থেকেও ছোট আকৃতির একটি ফ্লাইওভারের উপকারিতা পাওয়ারও কথা রয়েছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে যানজট অনেকটাই কমবে মনে করছে দুই সিটি।
জানা গেছে, যানজট প্রবণ রাস্তার সংযোগস্থলে মাটির নিচ দিয়ে স্বল্প দূরত্বের টানেলসদৃশ আন্ডারপাসগুলো তৈরি করার পরিকল্পনা ছিল গত সরকারের। এটি বাস্তবায়ন হলে ট্রাফিক সিগন্যালের কিছুটা দূর থেকেই গাড়িগুলো টানেলের মধ্যে ঢুকে মাটির নিচ দিয়ে সিগন্যাল পয়েন্ট অতিক্রম করতে পারবে। এতে ওইসব পয়েন্টে গাড়িগুলোকে দীর্ঘ সময় সিগন্যালে থাকতে হবে না। নগরবাসীরও সময়ের অনেক সাশ্রয়ী হবে। দুই সিটির ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট (ডিইউটিপি) থেকে স্বল্পব্যয়ী এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। একেকটি আন্ডারপাস তৈরিতে ব্যয় হওয়ার কথা ছিল প্রায় ৬৫ কোটি টাকা, ১০টি আন্ডারপাস তৈরিতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬৪০ কোটি টাকা। কাজ শুরু হলে দশ মাসের মধ্যেই সব আন্ডারপাস নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে তখন জানানো হয়।
জানা যায়, আপাদত ১০টি পয়েন্টে এ আন্ডারপাস নির্মাণের জন্য বাছাই করা হয়েছে। এরমধ্যে রাসেল স্কোয়ার, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নীলক্ষেত, ধানমÐি ২৭ নম্বর, ৭ নম্বর, ২ নম্বর, ফকিরাপুল ও রাজারবাগ-শাহজাহানপুরের ইন্টারসেকশনে গাড়িপারাপারের আন্ডারপাস নির্মাণ করার কথা ছিল। এ ছাড়া, মিরপুর রোডের টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ও ধানমÐি ২৭ নম্বরের মানিক মিয়া এভিনিউ ইন্টারসেকশনে হবে ইউটার্ন ভেহিকুলার আন্ডারপাস নির্মাণের কথা রয়েছে। এ দুটির মাধ্যমে গাড়িগুলো মাটির নিচ দিয়ে ইউটার্ন নিতে পারবে। বাচাই করা ১০টি পয়েন্টের যে মুখে যানবাহনের চাপ বেশি থাকে, সেদিক বরাবরই আন্ডারপাস নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। ওইসব পয়েন্টে পৌঁছার কিছু আগেই গাড়িগুলো মাটির নিচে তৈরি আন্ডারপাসে ঢুকতে পারবে। সংযোগস্থল অতিক্রম করেই আবার মূল রাস্তায় উঠা যাবে। এ জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণেরও প্রয়োজন হবে না। বিদ্যমান রাস্তার জায়গাতেই বাস্তবায়ন করা যাবে। স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানের (এসটিপি) সঙ্গেও প্রকল্পটি সাংঘর্ষিক হবে না। যেসব পয়েন্ট দিয়ে মেট্রোরেল বা ফ্লাইওভার রয়েছে, সে সব পয়েন্ট এড়িয়ে এ আন্ডারপাস তৈরি করার কথা জানানো হয়েছে। কাজেই মেট্রোরেল বা ফ্লাইওভারের ক্ষেত্রেও এ আন্ডারপাস বাঁধা হবে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ সিটির সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এ ধরনের আন্ডারপাস যানজট নিরসনে ব্যাপক কাজে লাগবে। ভারতের নয়াদিল্লিতে এই পদ্ধতি গ্রহণ করে ভালো ফল পাওয়া গেছে। এ লক্ষ্য নিয়েই এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু কি কারণে এ প্রকল্পের কাজ এখন শুরু করা যায়নি সেটা সাবেক মেয়ররাই ভালো বলতে পারবে।