অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সফ্টপাওয়ারের অধীন দেশে একটি শক্তিশালী ‘জনকূটনীতি’ বিষয়ক রূপরেখা প্রণয়নের ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশ অপার সম্ভবনার দেশ। এ দেশের শিল্প, সংস্কৃতি ও ইতিহাস অন্য দেশের চেয়ে একটু আলাদা। দীর্ঘমেয়াদি একটি শক্তিশালী জনকূটনীতি গঠনের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি বদলে দেবে। একই সঙ্গে এশিয়া এবং ইন্দো-প্যাসেফিক অঞ্চলে নিজেদের সক্ষমতা জোরদার করার একটি বড় মাধ্যম হবে এই জনকূটনীতি বা পাবলিক ডিপ্লোমেসি।
গতকাল শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মুজাফফ্র আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এ কথা বলেন। ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের হিস্যা: তরুণ নেতৃত্বের করণীয়’ এবং ‘পরিবর্তিত বিশ্বে বাংলাদেশের সফ্টপাওয়ার’ শীর্ষক এক নাগরিক সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ স্টাডি ফোরাম (বিডিএসএফ)।
নাগরিক সংলাপে অংশ নেন লেখক ও অর্থনৈতিক বিষয়ক এক্সপার্ট জিয়া হাসান, ভূ-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও তুরস্কের আঙ্কারা ইলদিরিম বেয়াজিট বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাজমুল ইসলাম, গবেষক ফয়সাল খান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনীতিক রাইস হাসান, বিডিএসএফ এর সভাপতি সাবেদিন ইব্রাহিম, আলাউদ্দিন মোহাম্মদসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এসময় বক্তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য প্রসার, অধিকতর বিনিয়োগ আকর্ষণ, নতুন নতুন প্রযুক্তি আমদানি এবং দেশের অব্যাহত উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নিতে বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী জনকূটনীতি খুবই প্রয়োজন। এটি নিশ্চিত করা সম্ভব হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রপ্তানি বাড়ানো, মানবসম্পদের বাজার সম্প্রসারণসহ বহির্বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তথা ইমেজ বিল্ডিং তৈরি হবে।
নাগরিক সংলাপে অংশ নিয়ে ভূ-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ড. নাজমুল ইসলাম বলেন, একটি দেশের সফ্টপাওয়ারের অধীন শক্তিশালী পাবলিক ডিপ্লোমেসি থাকা খুবই জরুরি। বন্ধুরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কোন কোন বিষয়ে সুসম্পর্ক তৈরি বা উন্নয়ন করতে হবে জনকূনীতির অধীন তার একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ থাকা উচিত। এই রোডম্যাপের মাধ্যমে এশিয়া এবং ইন্দো-প্যাসেফিক অঞ্চলে বাংলাদেশ তার নিজের সক্ষমতা জোরদার করবে। পাশাপাশি দেশে জনকূটনীতি বিষয়ক একটি ইনস্টিটিউশন থাকা প্রয়োজন। যে প্রতিষ্ঠান প্রতিবেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সোহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করবে।