টঙ্গী সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বিকেলে কলেজ মাঠে বৈষম্যরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব শহীদদের স্মরণে দ্রোহের গান ও কাওয়ালি সন্ধ্যা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার সময় অনুষ্ঠান চলাকালে হঠাৎ করে ২০/৩০জন দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে।
এসময় দূর্বৃত্তদের হামলায় আয়োজক কমিটির শাওন, রাসেল ও রিফাতসহ প্রায় ১০/১৫ জন আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত রাসেলকে টঙ্গী শহিদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে, রিফাতকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কজেল হাসপাতালে ও শাওনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় উত্তেজিত ছাত্রজনতা দুজনকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
আটককৃতরা হচ্ছে, টঙ্গী আউচপাড়া এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে সালাউদ্দিন সাদিক (২১) ও খাপাড়া এলাকার এনামূল হকের ছেলে মামুন মিয়া (১৯)। আটককৃতরা ছাত্রলীগের কর্মী ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। টঙ্গী সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী পারভেজ হোসেন বাদী হয়ে ৪০ জনকে শনাক্ত ও ১০/১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন, ইব্রাহিম চৌধুরী (৪০), রবিউল ইসলাম (৪১), রানা আহাম্মেদ (২৪), সাইফুলইসলাম আকাশ (৩৪), জালাল মাহমুদ (৫২), নজরুল মাস্টার (৪৩), ইয়াসিন (২১), ইয়াকুব (২২), ইফতি (২২), মাহফুজ (২২), সালাউদ্দিন (২৫), রাফি (২৩), আদনান মানিক (২৩), নাহিদ (২১), শেখ কামরুল হাসান সাহা (৪০), মোসাদ্দেক হোসেন রাফিও (২৩), কামরুল হাসান (২৩), আরিয়ান আহাম্মেদ (২৪), রাফসান (২৩), রাতুল (২২), ইকরাম (২৩), হৃদয় (২২), শুভ (২১), মীনহাজ (২১), মাহি (২২), ফারাবি (২১), ফাহিম (২১), রাফসান আহাম্মেদ (২১), জাহিদ হাসান (২৪), স্বপন (২৩), হারুন অর রশিদ (৪৫), সম্রাট (২৪), মোছাদ্দেক হাসান রাফি (২৬), আসিফ (২৪), আদনান আল জারির (২৪), মানিক (২৬), মোজাম্মেল (২৩) ও শ্রাবন বেপারী (২৭)।
এ বিষয়ে আয়োজক কমিটির আবু হানিফ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের আয়োজনে ও শহীদদের স্বরণে দ্রোহের গান ও কাওয়ালি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিকেল সাড়ে ৫টায় একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আমাদের ১৬ জনকে আহত করে। এ সময় হামলাকারী দুই জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
টঙ্গী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন গ্রুপের ছাত্র-জনতা মিলে একসঙ্গে অনুষ্ঠান করার চেষ্টা করেছিল। শেষ পর্যন্ত হয়তো তা হয়ে উঠেনি। এ কারণে উভয়ের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। অনুষ্ঠানের বিষয়ে মৌখিক অনুমতি ছিল বলে জানান তিনি।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। আটক দুজনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।