জাতীয় সংসদে হিন্দুদের জন্য সংখ্যানুপাতিক হারে আসন বরাদ্দের পক্ষে মত দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর শাহজাহান চৌধুরী। বুধবার সকালে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার পুন্ডরীক ধামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রাধাষ্টমী উৎসবে তিনি একথা বলেছেন বলে খবর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, আমরা মনে করি, জাতীয় সংসদে হিন্দুদের জন্য সংখ্যানুপাতিক হারে আসন বরাদ্দ থাকা উচিত। জামায়াতে ইসলাম ১৯৫৪ সালের নির্বাচন এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও এই দাবি তুলেছিল। যদি সংখ্যানুপাতিক আসন বরাদ্দ থাকে, তবে হিন্দুরাই তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করে সংসদে পাঠাতে পারবে। জামায়েতের রাজনীতি মানুষের জন্য এবং মানবতার কল্যাণের জন্য।
সনাতন স¤প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি সনাতনী, আমি মুসলিম, আমি আপনার কাছ থেকে দূরে থাকবো, এ শিক্ষা ইসলাম দেয়নি। ইসলাম অমুসলিমদের জন্য ভালোবাসা ও নিরাপত্তার কথা বলেছে। বাংলাদেশে আমাদের মধ্যে তো কোনো বিভেদ ছিল না। কারা রাজনীতির জন্য হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করলো ? দেশ আমার-আপনার, আমাদের সবার।
আমাদের আমীরে জামায়েত বলেছেন, আমরা নামাজ পড়তে যদি পাহারা দিতে না হয়, আমাদের মসজিদে যদি পাহারা দিতে না হয়, তবে হিন্দু ভাইদের মন্দিরে কেন পাহারা দিতে হবে ? আমরা এমন দেশ গড়তে চাই যেখানে সব ধর্মের মানুষ তাদের উৎসব অনুষ্ঠান করবে নির্বিঘ্নে।
সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী আরও বলেন, কোনো সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু হবে না। আমরা বাংলাদেশি, আমরা এক। আমাদের জন্মনিবন্ধন-জাতীয় পরিচয়পত্র-সংস্কৃতি-খাবার-ব্যবহার সবই এক, তাহলে বিভেদ কেন?
আমরা সবাই বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। তাই শিক্ষার অধিকার, ধর্মীয় আচরণের অধিকার, খাবারের অধিকার, বসবাসের অধিকার, কথা বলার অধিকার সবার সমান হতে হবে। কারো বেশি, কারো কম হতে পারবে না। এজন্য আমাদের সংবিধানে পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা সবাই বাংলার সন্তান-সে হিসেবে সংবিধান রচিত হতে হবে।
পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক বিপ্লব পার্থের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস, পাচুরিয়া তপোবন আশ্রমের অধ্যক্ষ রবীশ্বরানন্দ পুরী, বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত শচ্চিতানন্দ পুরী ও অক্ষরানন্দ পুরী, নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের সহ-সভাপতি আকিঞ্চন গৌরদাস, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব ধর তমাল ও উত্তর জেলার সদস্য সচিব জুয়েল চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম মহানগর শিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বাবু, হাটহাজারী উপজেলা জামায়াতের আমীর সিরাজুল ইসলাম ও হাটহাজারী পৌরসভার আমীর মিজানুর রহমান এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-ঐক্য পরিষদের গোবিন্দ প্রসাদ মহাজন।