প্রকাশ: রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪:৪২ পিএম (ভিজিটর : ১৯৩)
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে আব্দুল মোতালিব (১৪) নামের এক কিশোর নিহতের ঘটনায় রাজধানীর ধানমন্ডি থানার হত্যা মামলায় সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) ৭ দিনের রিমান্ডের ভেতর দুইদিনের রিমান্ড শেষেই তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর দিনগত রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে শাজাহান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদের আদালত তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন। সেদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. খোকন মিয়া আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
তাকে রিমান্ডে নেয়া এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিরা দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর নিপীড়ন শুরু করতে পুলিশ, র্যাব ও ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। এরপর পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীসহ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকাসহ সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা-নির্যাতন চালায়। এতে শত শত মানুষ মারা যান। অনেক লোক আহত ও পঙ্গু হন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বাদীর ছেলে আব্দুল মোতালিব (১৪) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হন। গত ৪ আগস্ট ধানমন্ডি থানাধীন জিগাতলা বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর বাদীর ছেলে অন্যান্য ছাত্র ও সাধারণ মানুষদের সাথে অবস্থানকালে আসামিগণের পরিকল্পনা ও হুকুমে হত্যার উদ্দেশ্যে ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশ, র্যাব, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা করে। তারা শত শত সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং হাতবোমা ও রাবার বুলেট ছোড়ে। ঘটনাস্থলে অনেক নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা আহত ও নিহত হন। এর মধ্যে আব্দুল মোতালিব বুকে ও গলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।
এই ঘটনায় ভিকটিমের বাবা আব্দুল মতিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে নৌপরিবহন মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন শাজাহান খান। এছাড়া পরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের বিতর্কিত নির্বাচনের পর তিনি আর মন্ত্রীসভায় স্থান পাননি।