প্রকাশ: শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪, ১২:১৫ পিএম (ভিজিটর : ৫২২)
স্থগিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাগুলো না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফল প্রকাশের দাবিতে সচিবালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ করে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। সচিবালয়ের শিক্ষাভবনে ঢুকে পড়ে তাদের দাবির পক্ষে স্লোগান দিতে থাকে ঢাকা কলেজ, সরকারি কবি নজরুল কলেজসহ বেশ কটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে আন্দোলনের মুখে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয় শিক্ষা বিভাগ। জানানো হয় এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। তবে কীভাবে ফল প্রকাশ করা হবে সে সিদ্ধান্ত পড়ে হবে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার এই তথ্য নিশ্চিত করেন। একই দিন এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় চলতি বছরের বাকি পরীক্ষাগুলো অর্ধেক প্রশ্নোত্তরে অনুষ্ঠিত হবে। পুনরায় পরীক্ষার তারিখ ১১ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে আরো দুই সপ্তাহ পড়ে অনুষ্ঠিত হবে। তবে আন্দোলনের মুখে বাকি পরীক্ষা স্থগিত করে অটো পাসের দাবি মেনে নিয়েছে সরকার। তবে এ ব্যাপারে কিছু ধোঁয়াশা আছে। ছাত্ররা ‘অটোপাস অটোপাস’ সেøাগান দিয়েছে। আবার সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের দাবিও করেছে। আমরা মনে করি সাবজেক্ট ম্যাপিংই ভালো সমাধান হতে পারে, কারণ যে কোনো অবস্থায় শিক্ষার মান ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
এইচএসসি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বাতিলের আন্দোলন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে প্রথম একটা বড় ধরনের আন্দোলন। একটি গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন এবং দাবি যদি যৌক্তিক হয় সরকারের সিদ্ধান্ত কেমন হওয়া উচিত তার একটি দৃষ্টান্ত তৈরি হলো। ছাত্রদের আন্দোলন ছিল অহিংস, তারা কোনো গাড়ি ভাঙচুর করেনি, কারো দরজায় লাথি মারেনি, তবে সচিবালয়ে ঢুকে পড়াটা বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। সেটা বয়সজনিত বলে মনে হয়।
অন্যদিকে পুলিশ কোনো গুলি করেনি, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড চার্জ করা হয়নি, সর্বপোরি সরকার কোনো রকম কালক্ষেপণ না করে দাবি মেনে নিয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে এরকমই হওয়া উচিত। কিন্তু আন্দোলনকারীদেরও তাদের সীমা সম্পর্কে সতর্ক থাকা উচিত।
এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক ছিল। তারা কোটা আন্দোলনের দেড়মাস ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারেনি। অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে আছে। প্রধান সাবজেক্টগুলোর পরীক্ষা সম্পন্ন হয়ে গেছে, এখন ঐচ্ছিক এবং ল্যাব সাবজেক্টগুলো আছে। এগুলো এসএসসির ফল এবং ক্লাসটেস্টের ফল ম্যাপিং করে নম্বর দিলে বিরাট কোনো ক্ষতি হবে বলে মনে হয় না। তবে এটার পুনরাবৃত্তি হলে তা ঠিক হবে না, আর যাই হোক শিক্ষার মান নিয়ে কোনো রকম আপস করা সমীচীন হবে না।