নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌরশহরের বিভিন্ন দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি এঁকেছেন শিক্ষার্থীরা। এসব গ্রাফিতে সাম্য ও শান্তির বার্তা ফুটে উঠেছে। কিন্তু মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লেখনীতে বিধিমালা দেওয়ায় এবং কিছু অংশ মুছে ফেলায় উত্তেজনা বিরাজ করে। স্কুলের ভিতরে শিক্ষাথীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করে।অবশেষে নেতাকর্মী ও অভিভাবকের উপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছাত্র সমাজের সাথে যেসব কথা বলেছি এবং লিখা মুছে ফেলা আমার জন্য সঠিক হয়নি বলেন । আমার কাজের জন্য সরি বলা ছাড়া আর কোন উপায় নেই । অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন ।
মোহনগঞ্জ সরকারি কলেজ, মহিলা কলেজ, পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের দেয়ালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ও ব্যক্তিগত দেয়ালে গ্রাফিতি এঁকেছেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি শহরের রাস্তার পাশে জমে থাকা ময়লা আবর্জনাও তারা দল বেঁধে পরিষ্কার করেছেন।
এছাড়া কয়েকদিন থেকে সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্বও পালন করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। বিভিন্ন অফিসের অনিয়মের বিষয়ে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার মোহনগঞ্জ শহর ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
এ সময় শিক্ষার্থী হৃদয় আহমেদ বাবু জানায়, এদেশ সবার, এদেশে বৈষম্যের জায়গা নেই। সকল ধর্মের, সকল বর্ণের, সকল শ্রেণি পেশার মানুষ একত্রে বসবাস করবে এমন একটা দেশ আমরা গড়তে চাই। গ্রাফিতে আমরা সেসব চিত্রই তুলে ধরেছি। এছাড়া সারা দেশের ন্যায় আমরা শিক্ষার্থী মোহনগঞ্জ শহরেও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করছি। তরুণ প্রজন্মের হাত ধরেই এই দেশ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছবে আশা করছি।
শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান জকি জানায়, আমাদের দেশ আমাদেরই গড়তে হবে। এ দায়িত্ব তরুণ প্রজন্মকে নিতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতির দেশ গড়তে চাই। মত প্রকাশের ভাষা হোক সহিষ্ণু ও শান্তিপূর্ণ। সবাই সবার ধর্ম যে যার মতো পালন করুক। এসব বার্তাই আমরা রং তুলিয়ে ফুটিয়ে তুলেছি।
জানা যায়, স্কুলের দেয়ালে যাতে শিক্ষার্থীরা কোন কিছু লিখতে না পারেন তার জন্য স্কুলের পক্ষ থেকে বাণী লেখার উদ্যোগ নেন। সরকার পতনের পরপরই এই লেখা শুরু করেন। ইহা উনার কৌশল।
পাইলট স্কুলের দেয়ালে বাহির অংশ কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে ৪ টি অংশে লিখার অনুমতি দেন। মঙ্গলবার মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লেখার অনুমতি চাইলে দুইটি অংশে লিখার অনুভূতি দেন। শিক্ষার্থীদের লিখার পশ্চিম অংশে পেশাদারী, আটিস্ট একটি গ্রাফিক্স লিখে নিচে একজন নেতার নাম লিখেন । উক্ত লিখা দিখে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খায়রুল বাশার উত্তেজিত হয়ে স্কুলের শিক্ষার্থীদেরকে নানা কথাবার্তা বলতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা বলে ওই লেখাটি আমরা লিখিনি । তিনি শিক্ষার্থীদের কথাবার্তা কর্ণপাত না করে শিক্ষার্থীদের কে দায়ী করে অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকেন । এক পর্যায়ে ক্ষেপে যান । ওই লেখাটি বুঝতে না চাইলে শিক্ষার্থীদের কে দিয়ে জোর করে মুছে ফেলতে বাধ্য করেন । শিক্ষার্থীদের কে দিয়ে নেতার নাম মুছে ফেলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন । উক্ত সংবাদ পেয়ে ছাত্র জনতা স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে হাজির হয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে মুছে ফেলার কারণ জানতে চাইলে তিনি উত্তপ্ত হয়ে পড়েন এবং অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকেন । প্রধান শিক্ষকের আপত্তিকর, ও অশালী কথা শুনে ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে কথাবার্তা শুরু হয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নেক্কারজনক কথা বলায় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে । উক্ত সংবাদ শুনে নেতা কর্মীরা স্কুলে ছুটি আসেন । সিনিয়র নেতা কর্মীদের সম্মুখে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খায়রুল বাশার বলেছেন, আমি নিষেধ করেছি এবং ঘটনা স্থলে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের কে দিয়ে নেতার নাম লেখা লিখা আমি উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের কে দিয়ে মুছে ফেলা ঠিক হয়নি। আমার ভুল হয়েছে , আমার কাজের জন্য সবার কাছে মাফ চাচ্ছি বলে বক্তব্য প্রদান করেন। পরে বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে নিষ্পত্তি হয়।