বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোনে ছাত্র জনতার বিজয়ে দেশকে ভবিষ্যতে আরো সুশৃঙ্খল এবং দুনীতি ও সিন্ডিকেট মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন ভোক্তারা। বিশেষ করে বাজারের সিন্ডিকেট ভেঙে নতুন করে বাজার ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজানোর দাবী জানিয়েছেন ক্রেতারা।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেশ কয়েক জন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীর সাথে কথা হয়। এসময় ওই ব্যবসায়ী এবং ভোক্তা উভয় পক্ষই সিন্ডিকেটের কালো থাবা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আসন্ন নতুন সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ফার্মের মুরগির ডিম ডরজন ছিল ১৪০ টাকা বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ডরজন প্রতি ১৮০ টাকায়। ২ দিন আগে প্রতিকেজি ২৮০ টাকা বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১০০ টাকায়। বাজারে প্রতিকেজি করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, উস্তা প্রতিকেজি ৮০ টাকা, ভিন্ডি প্রতিকেজি ৪০ টাকা, পোটল প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। তবে বেড়েছে মুশুরের ডালের দাম। প্রতিকেজি ১০৫ টাকায় বিক্রি হওয়া মুশুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৬৫ টাকা থেকে ৫ টাকা বেড়ে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি ৫২ টাকা দরে বিক্রি হওয়া মোটা চাল ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই ভাবে দাম বেড়েছে আঁটাশ চালেরও প্রতিকেজি ৫২ টাকা থেকে ৮ টাকা বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাওয়ান বাজারে আসা ক্রেতা খালেদ বলেন, আমরা সাধারণ মানুষ এক প্রকার জিম্মি হয়ে ছিলাম। বাজারের শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কাছে আমরা দিন দিন নিঃশ্ব হয়ে যাচ্ছি। ছাত্র জনতা অভ্যত্থানের মাধ্যমে যে বিজয় এসেছে তাতে ভবিষ্যতের নতুন বাংলাদেশ বির্নিমানে বাজার ব্যবস্থাপনাকে নতুন করে সাজাতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় থাকে সে দিকে নজর রাখতে হবে।
ওই বাজারে আসা জাকির মিয়া নামে এক ভোক্তা বলেন, আমরা একবারেই নিঃশ্ব হয়ে গেছি। যে টাকা আয় করি তা দিয়ে কোনো রকমে মাসটা কেটে যায়। সঞ্চয় করার কোনো সুযোগই নেই। পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী এসব দেখেও না দেখার ভান করে থাকতেন। তার কান পর্যন্ত গরীবের আর্তনাদ পৌঁছায়নি। তিনি বলেন, যারা চেয়ারে বসবেন তাদের উচিত প্রথমেই বাজার ব্যবস্থাপনাকে সুষ্ঠুভাবে ঢেলে সাজানো। যেন অবৈধ ব্যবসায়ীরা কাউকে জিম্মি করতে না পারে। যে যেভাবে খুশি পণ্যের দাম হাকাতে না পারে।
কারওয়ান বাজারের সবজি বাজারে কথা হয় খাইরুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, একটি শক্তিশালী বাজার মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে। সেই সাথে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ যেন নির্বিঘ্নে হয় সেই ব্যবস্থাও নিতে হবে। পুরো সিস্টেমে কোথায় কি সমস্যা রয়েছে সেগুলো খুজে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে।
কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা শামীম বলেন, আমরা সব সময়ই আতঙ্কে থাকি। কখন কোন পণ্যের দাম বাড়ে। লোকসান হয় কি না। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের খেয়াল খুশি মতো হুটহাট পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে ক্রেতাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়।