সৌদিআরবে ২০৩৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল হবে ৫টি শহরের ১৫টি স্টেডিয়ামে। শহরগুলো হলো- রিয়াদ, জেদ্দা, আল খোবার, আবহা ও নিওম। গত মঙ্গলবার সৌদি আরব ফিফার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের বিড করার পর এ ঘোষণা জানানো হয়।
সৌদিআরবের রাজধানী রিয়াদেই হবে ৮টি স্টেডিয়াম। যার মধ্যে একটি স্টেডিয়াম রয়েছে ৯২ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার। নির্মাণাধীন এই স্টেডিয়ামের নাম কিং সালমান স্টেডিয়াম। এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২৯ সালে। এখানেই বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ও ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে নির্মাণের পর সৌদি জাতীয় ফুটবল দলের হোমভেন্যু হিসেবে এই মাঠ বিবেচিত হবে।
সৌদি অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক কমিটির ক্রীড়ামন্ত্রী এবং সভাপতি প্রিন্স আব্দুল আজিজ বিন তুর্কি আল-ফয়সাল জানান, ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজন করে সৌদি আরবের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য আমরা একসাথে কাজ করছি। যেমনটি আমাদের অফিসিয়াল বিড বইয়ে বলা হয়েছে।
এছাড়া বিশ্বকাপ আয়োজনের মাধ্যমে সৌদি ক্রীড়ার ক্ষমতায়ন ও যেকোনো সমস্যা সমাধানে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন দেশটি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
বিশ্বকাপের উদ্দেশে নির্মিত স্টেডিয়ামগুলোর মাধ্যমে নিজেদের ঐতিহ্য বিশ্ববাসীর মাঝে তুলে ধরবে সৌদি। নানা ঢংয়ে ও কারুকার্যে নিজেদের সভ্যতা ও সংস্কৃতির জানান দেবে দেশটি। কিং সালমান স্টেডিয়াম ছাড়াও সৌন্দর্যমণ্ডিত বেশকিছু মাঠ তৈরি করবে তারা।
মূল টুর্নামেন্টের ম্যাচ আয়োজনের জন্য ১৫টি স্টেডিয়াম ব্যবহার করা হবে যার মধ্যে আটটি স্টেডিয়াম সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অবস্থিত। এর মধ্যে রয়েছে নতুন কিং সালমান স্টেডিয়াম যেটি ৯২ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন; উদ্বোধনী খেলা এবং ফাইনাল খেলা দুটিই এখানে আয়োজিত হবে।আরেকটি নতুন ভেন্যু নিওম স্টেডিয়াম 'দ্য লাইন'-এর অংশ হবে।
'দ্য লাইন' মরুভূমি এবং পাহাড় জুড়ে প্রসারিত একটি পরিকল্পিত ১০৬ মাইল দীর্ঘ শহর যেখানে দুটি সমান্তরাল গগনচুম্বী অট্টালিকা ওয়াকওয়ে দ্বারা সংযুক্ত। স্টেডিয়ামটি মাটি থেকে ৩৫০ মিটার উপরে থাকবে এবং বায়ু ও সৌর উত্স থেকে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করবে। এর নির্মাণ কাজ ২০৩২ সালের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে শহরটির নির্মাণ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।এছাড়াও বিদ্যমান চারটি স্টেডিয়াম— কিং সৌদ ইউনিভার্সিটি স্টেডিয়াম, কিং আবদুল্লাহ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়াম, কিং খালিদ ইউনিভার্সিটি স্টেডিয়াম এবং কিং ফাহাদ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়াম সংস্কার করা হবে।সৌদি আরবের আরও দশটি শহর বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারি দলগুলোর প্রশিক্ষণ ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হবে। বিডে সৌদি আরবের মোট ১৩৪টি প্রশিক্ষণ ঘাটি রয়েছে যার মধ্যে ৬১টি বিদ্যমান সুবিধাযুক্ত এবং ৭৩টি নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে।
বর্তমানে রিয়াদের অন্যতম বিখ্যাত একটি স্টেডিয়াম হলো কিং ফাহাদ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপের আগে এটি সংস্কার করা হবে। আন্তর্জাতিক মানের দিকে নজর দেওয়ার পাশাপাশি আসন সংখ্যা ৭০ হাজারে বর্ধিত করা হবে। স্টেডিয়ামটিতে লোহিত সাগরের প্রবালপ্রাচীরের চিত্রায়ন করা হবে।
স্থানীয় সংস্কৃতি ও সভ্যতা প্রতিফলন ঘটিয়ে জেদ্দায় নির্মাণ করে জেদ্দা সেন্ট্রাল ডেভেলপমেন্ট স্টেডিয়াম। সেখানে থাকবে কাঠের কারুকার্য। মূলত, আল বালাদ শহরের কাঠের ঘরবাড়ির প্রতিনিধিত্ব করবে এই স্টেডিয়াম।
এছাড়া আরব উপসাগরের পাশে নির্মিত হবে আরামকো স্টেডিয়াম। সেখানে ফুটিয়ে তোলা হবে সাগরের মনোরম দৃশ্য। এদিকে কিং খালিদ ইউনিভার্সিটি স্টেডিয়ামের আসন সংখ্যা ৪৫ হাজার করা হচ্ছে।