মানুষের ধৈর্যশক্তি যখন দিনদিন লোপ পাচ্ছে , আর পৃথিবী যখন সহজ ও সর্টের দিকে এগুচ্ছে এমন সময়ে প্রতিদিন প্রচুর ধৈর্য নিয়ে খবরের কাগজের সবগুলো খবর মনোযোগ দিয়ে না পড়লে যেন তাঁর স্বস্তি নেই। তাও আবার প্রতিটি খবরের পুরোটা অংশ ভালোভাবে তাকে পড়তেই হবে। এভাবেই পুরো একটি পত্রিকা পড়ে শেষ করেন তিনি। বলছিলাম হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা মোঃ ফরিদ উদ্দিন' র কথা । এলাকার সবাই ফরিদ মুন্সী নামেই ডাকেন । পত্রিকা পড়ার প্রতি তার গভীর আগ্রহের কারনে এলাকায় পরিচিত হয়েছেন পত্রিকাপ্রেমী হিসেবে। অনেকে আবার ভালোবেসে পত্রিকার পোকা ও বলে থাকেন। তবে পত্রিকা প্রেমী আর পত্রিকার পোকা যে যাই বলুক না কেনো ৭৭ বছর বয়সের ফরিদ উদ্দিন (ফরিদ মুন্সি) ৪৮ বছর ধরে এভাবেই পত্রিকা পড়ে আসছেন। পড়া লেখা করেছেন দ্বিতীয় শ্রেনী পর্যন্ত।
তবে নিজের অদম্য ইচ্ছে শক্তি দিয়ে আয়ত্ত করেছেন খবরের কাগজ পড়া। যে কোন লেখা পড়তে কোন সমস্যা হয়না তার। এতো বয়স হলেও পত্রিকা পড়তে পারেন চশমা ছাড়াই। পত্রিকা পড়ার জন্য আজ এই দোকানে তো কাল অন্য দোকানে। যে দোকানে পত্রিকা রাখা হয় সে দোকানে বসে পত্রিকা পড়েই কাটান অবসর সময়। তবে বেশির ভাগ সময় তাকে পত্রিকা পড়তে দেখা যায় উপজেলার আজমিরীগঞ্জ লালমিয়া বাজারের ব্যাবসায়ী সুলতান মিয়ার দোকানে। আবার কখনো দেখা যায় হাবিবুর রহমানের ফার্মেসীতে কিনবা মডেল প্রেসক্লাবে।
এ বিষয়ে লাল মিয়া বাজারের ব্যাবসায়ী সুলতান মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন ফরিদ মুন্সীর পত্রিকা পড়ার
প্রতি খুব আগ্রহ, আমরা দেখে আসছি সে অনেক দিন থেকে এভাবেই পত্রিকা পড়েন। শুধু পত্রিকা পড়া নয় নামাজের পর কোরআন তেলাওয়াত করেন নিয়মিত। মসজিদে মুয়াজ্জিন না থাকলে নিজেই নেন আযান দেওয়ার দায়িত্ব। পত্রিকা আর কোরআন পড়েই কাটে তার সময়। ৬ ছেলে এবং ৪ মেয়ের জনক তিনি। ছেলেরা নিজ নিজ সংসার নিয়ে ব্যাস্ত। অসচ্ছল পরিবার কোন মতে চলে সংসার।
ভোরের ডাকের এই প্রতিনিধির কথা হয় ফরিদ উদ্দিন (ফরিদ মুন্সি) 'র সাথে । তিনি জানান ১৯৭৭ সাল থেকে পত্রিকা পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠেছে । এখন না পড়লে ভালো লাগে না। কোন কারণে যদি একদিন পত্রিকা পড়া না হয় সে দিনটাই যেন অপূর্ণ মনে হয়। তিনি আরও বলেন পত্রিকা পড়লে দেশের কোথায় কি ঘটলো সব খবর পাওয়া যায় তাই সবারই পত্রিকা পড়া উচিৎ।