দেশের সবচেয়ে বড় পেশাজীবী সংগঠন বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করেছেন নির্বাচন কমিশন। এতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যাপক মামুন উল হক। আর বিপুল ভোটের ব্যবধানে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মো. তানভীর হাসান। এ ছাড়াও অর্থ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান লিখন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ ফলাফল ঘোষণা করেন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সভাপতি পদে ‘খ’ প্যানেলের মামুন উল হক ৪ হাজার ৮২০ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ‘গ’ প্যানেলের অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী পেয়েছেন ৪ হাজার ৬০৭ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে ‘গ’ প্যানেলের তানভীর হাসান ৪ হাজার ৬৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী খ প্যানেলের জিয়া আরেফিন আজাদ পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৬০ ভোট। অন্যদিকে অর্থ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন ‘গ’ প্যানেলের সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান লিখন। তিনি ৪ হাজার ৪০১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ‘খ’ প্যানেলের মো. নাসির উদ্দিন পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৫৯ ভোট।
বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক সাইফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে তিনটি প্যানেল ও দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে ‘ক’ প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন রুহুল কাদির-হুমায়রা-কামাল। ‘খ’ প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন মামুন-জিয়া-নাসির। আর ‘গ’ প্যানেলে ছিলেন শাহেদ-তানভীর-মোস্তাফিজ।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ১৩ হাজার ৫৯৬ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১১ হাজার ৫০০ জন। এর আগে গত রোববার (৯ জুন) বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া সহ-সভাপতি পদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নির্বাচিত হয়েছে ‘খ’ প্যানেল থেকে। ঢাকা মহানগর (নারী), ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা-নোয়াখালী, রংপুর, খুলনা ও সিলেট সাংগঠনিক বিভাগে এই প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছে। অন্যদিকে ‘গ’ প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছে ঢাকা মহানগর (পুরুষ), ফরিদপুর, রাজশাহী ও বরিশাল সাংগঠনিক বিভাগে। ‘ক’ প্যানেল থেকে এখানে কেউ জিততে পারেনি।
যুগ্ম সম্পাদক পদগুলোতে ‘খ’ প্যানেলের জয়জয়কার। এখানে ঢাকা মহানগর (পুরুষ), ঢাকা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট সাংগঠনিক বিভাগে ‘খ’ প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর (নারী), কুমিল্লা-নোয়াখালী, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগে ‘গ’ প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছে। এখানেও ‘ক’ প্যানেলের কোনো প্রার্থীর জয় নেই।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে লড়াই হয়েছে সমানে সমানে। দুই প্যানেল থেকেই ৬ জন করে সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছে। এর মধ্যে ‘খ’ প্যানেল জিতেছে ঢাকা মহানগর (নারী), ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা-নোয়াখালী, রংপুর ও বরিশালে। গ প্যানেল জিতেছে ঢাকা মহানগর (পুরুষ), ঢাকা, ফরিদপুর, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেটে।
তবে সম্পাদক পদগুলোতে একচেটিয়া জিতেছে ‘গ’ প্যানেলের প্রার্থীরা। প্রচার, দপ্তর, আইন, প্রকাশনা, তথ্য ও গবেষণা, আন্তর্জাতিক, সেমিনার ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে এই প্যানেলের প্রার্থীরা জিতেছেন। অন্যদিকে ‘খ’ প্যানেল থেকে শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে জয় এসেছে। ‘গ’ প্যানেলের প্রার্থীরা আরও জিতেছেন সহ-প্রচার, সহ-দপ্তর, সহ-আইন, সহ-তথ্য ও গবেষণা, সহ-সাংস্কৃতিক, সহ-আন্তর্জাতিক, সহ-সেমিনার ও সহ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে।
অন্যদিকে সহ-অর্থ ও সহ-প্রকাশনা সম্পাদক পদে জিতেছে ‘খ’ প্যানেলের প্রার্থীরা।
নির্বাহী সদস্য পদে ঢাকা মহানগরে খ ও গ দুই প্যানেলের ৩ জন করে ৬ জন, ঢাকায় খ প্যানেলের ১ জন ও গ প্যানেলের ২ জন, ময়মনসিংহে খ প্যানেলের ১ জন ও গ প্যানেলের ২ জন, ফরিদপুরে খ ও গ প্যানেলের ১ জন করে ২ জন, চট্টগ্রামে খ প্যানেলের ২ জন, কুমিল্লা-নোয়াখালীতে খ প্যানেলের ১ জন ও গ প্যানেলের ২ জন, রাজশাহীতে খ প্যানেলের ৪ জন ও গ প্যানেলের ১ জন, রংপুরে খ প্যানেলের ১ জন ও গ প্যানেলের ২ জন, খুলনায় গ প্যানেলের ৫ জন, বরিশালে খ প্যানেলের ২ জন ও গ প্যানেলের ১ জন এবং সিলেটে গ প্যানেল থেকে দুজন নির্বাচিত হয়েছেন।