প্রকাশ: বুধবার, ১২ জুন, ২০২৪, ৫:৪৩ পিএম (ভিজিটর : ৪৭৫)
আগামী আক্টোবরে ‘খামারি’ মোবাইল অ্যাপ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার। বুধবার রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি তথ্য সার্ভিসের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত 'স্মার্ট কৃষি বাস্তবায়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
কৃষি সচিব বলেন, দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে ৪০২টি উপজেলায় ‘খামারি’ অ্যাপ যাচাইকরণ হয়ে গেছে। আগামী অক্টোবরে এটি আমরা চালু করবো। এ অ্যাপের মাধ্যমে মাটির গুণগত মান, মাটিতে কোন ধান বপন করলে ফলন ভালো হবে এবং কী পরিমাণ সার দিতে হবে- সেসব সম্পর্কে কৃষক জানতে পারবে। এই অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে খরচ কমবে ও ফসলের উৎপাদন বাড়বে। কারণ এ অ্যাপের মাধ্যমে মাটির গুণগত মান, মাটিতে কোন ধান বপন করলে ফলন ভালো হবে এবং কী পরিমাণ সার দিতে হবে- সেসব সম্পর্কে জানা যাবে। এ অ্যাপের মাধ্যমে আবহাওয়া সম্পর্কেও ধারণা লাভ করতে পারবে কৃষক।
তিনি বলেন, স্মার্ট কৃষিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তির মাধ্যমে যথার্থ সেচ এবং চাহিদাভিত্তিক সুনির্দিষ্ট উদ্ভিদ পুষ্টি, গ্রিনহাউজে জলবায়ু ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণ, মাটি, জল, আলো, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা ব্যবস্থাপনার জন্য সেন্সর ও সফটওয়্যার প্ল্যাটফরম; জিপিএস, স্যাটেলাইট, যোগাযোগ ব্যবস্থা, মোবাইল সংযোগ, রোবট, চোন ইত্যাদির ব্যবহার, রিমোট সেনসিং এবং জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্ষতিকর পোকামাকড় ও রোগের পূর্বাভাস প্রদান ও দমন, আর এসব প্রযুক্তির মধ্যে আন্তঃসংযোগ তথা নেটওয়ার্ক সৃষ্টির জন্য বিশ্লেষণ এবং অপটিমাইজেশান প্ল্যাটফরম তথা ইন্টারনেট অব থিংস যার ওপর ভিত্তি করে কৃষকরা তাদের খামারের প্রক্রিয়াগুলো নিরীক্ষণ করতে পারে এবং দূর থেকে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। শুধু তাই নয়, স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনাও স্মার্ট কৃষির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক ড. সুরজিত সাহা রায়ের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এটুআই এর কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশন প্রধান পূরবী মতিন। মূল প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের কৃষি উন্নয়নমূলক অনুষ্ঠান 'মাটি ও মানুষ' এর উপস্থাপক রেজাউল করিম সিদ্দিক ও চ্যানেল আই'র সাংবাদিক ও বার্তা সম্পাদক মীর মাসরুর জামান। এছাড়া অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, কৃষি তথ্য সার্ভিসের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা বি এম রাশেদুল আলমসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, প্রযুক্তির এই সম্প্রসারণে যত প্রকার উপায় রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে স্বল্পতম সময়ে, স্বল্পতম ব্যয়ে এবং অত্যন্ত ব্যাপকহারে প্রযুক্তি বিস্তারের সর্বাপেক্ষা যুতসই উপায় হল গণমাধ্যম। শুধু প্রযুক্তির সম্প্রসারণ-ই নয়, কৃষি ক্ষেত্রের উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত বিরাজমান সকল পক্ষের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে তথ্যের সঞ্চালন ও প্রচারের মাধ্যমে আন্তঃযোগাযোগ ঘটিয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ স্থিতিশীল কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতেও গণমাধ্যম ভূমিকা রয়েছে। একটি কার্যকর সাপ্লাই চেইন প্রতিষ্ঠা করতে গণমাধ্যম এর অংশগ্রহণ এখন সময়ের দাবি। কৃষিতে আমাদের গৌরবোজ্জ্বল অর্জনগুলোকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন ও ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের গণমাধ্যম বিশ্বব্যাপী ভোক্তাদের বাংলাদেশের কৃষি পণ্যে আগ্রহ সৃষ্টি, কৃষিপণ্যের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন, বাজার সৃষ্টি ও চাহিদা বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারেন।