প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩, ৩:০৬ পিএম (ভিজিটর : ৭৬১)
রাজধানী পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ । সম্প্রীতি কলেজটিতে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারের এইচএসসি'র ফলাফলে ধস নেমেছে। গত বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় যেখানে পাশের হার ছিল ৮৭.৬৮% এবং জিপিএ পেয়েছিল ১১৯ জন সেখানে এবছর পাশের হার দাঁড়িয়েছে ৮০.৪৪% এবং জিপিএ পেয়েছে মাত্র ৮ জন, যা সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এমন বিপর্যয়ের পিছনে সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কলেজ প্রশাসনের তদারকির অভাবকেই দায়ী করছেন। অপর দিকে এর পেছনে নানা কারণ দায়ী করছে কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক এবং সিনিয়র শিক্ষার্থীরা।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, ঐতিহ্যবাহী এমন একটি কলেজ থেকে ২০৭৬ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে ১৬৭০ জন এবং জিপিএ-৫ কিভাবে মাত্র ৮ জন পাই এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। যেখানে ঢাকা কলেজ থেকে ১০৯২ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে ১০৮৭ জন এবং জিপিএ-৫ পাই ৮১২জন, সেখানে সোহরাওয়ার্দীতে মাত্র ৮ জন! ঢাকা কলেজের শিক্ষকরাও বিসিএস ক্যাডার, এখান কার শিক্ষকরাও বিসিএস ক্যাডার। তারও যে সুযোগ -সুবিধা পাই এখান কার শিক্ষকরাও একই সুযোগ -সুবিধা পাই। তাহলে কলেজ প্রশাসন কি করে? এখানে লেখাপড়ার মান দিন দিন তাহলে কি হারিয়ে যাচ্ছে?
এই বিষয়ে পাশকৃত শিক্ষার্থী রেদোয়ান হোসাইন বলেন, কলেজ কতৃপক্ষের গাফিলতিই হলো প্রধান কারন। ছাত্রছাত্রীরা কলেজের নাম করে বাইরে আড্ডা দেয়, সিগারেট খাই , মেয়েদের নিয়ে ঘোরাঘুরি সহ আরো কত কি। কিন্তু এই বিষয়ে প্রশাসনের কোনো নজরদারিই নেই । অথচ অন্যান্য সরকারি কলেজে ১ দিনের পরে ২ দিন অনুপস্থিত থাকলেই বিষয়টা অভিভাবককে জানানো হয়। কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। যারা ভালো রেজাল্ট করছে তারা একান্ত নিজের চেষ্টায় করছে।
এই বিষয়ে সিনিয়র শিক্ষার্থী আল্পনা জামান অনন্যা বলেন, কলেজ প্রশাসনই একমাত্র দায়ী, কারণ তারা ছাত্র- ছাত্রীদের পড়াশোনার প্রতি কোনো চাপ সৃষ্টি করে না। যেখানে ক্লাসে বসতে পারে ১০০ জন, সেখানে ভর্তি নেয় ৮০০ থেকে ১০০০ জনের অধিক।
এমন ফলাফল ধসের কারণ জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহসীন কবির বলেন, পুরো বোর্ডেই পাশের হার কম সেই তুলনায় আমাদের ভালোই হয়েছে, তবে জিপিএ কম এসেছে। আমি আসার আগে এখানে পাশের হার ছিল ৬৫/৬৬% সে তুলনায় এখন ভালো আছে। তবে এবার পাশের হার গতবারের তুলনায় একটু কমে গেছে, সেটা কেনো কমে গেল এটা আমরা দেখবো। তিনি আরও বলেন, পাশের হার কেনো কমে আসলো এবং ফলাফল কেনো খারাপ হলো এই বিষয়ে উপাধ্যক্ষকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, উনি এনালাইসিস করে বা কমিটি গঠন করে কিভাবে এমন হলো সেটা দেখবেন। এছাড়াও তিনি বলেন রেজাল্ট খারাপের বিষয়ে আমরা চিন্তিত। এটা নিয়ে আমরা এনালাইসিস করবো এবং একাডেমি কাউন্সিলে মিটিং করবো। এটার কারণ খুজবো এবং উত্তরণের চেষ্টা করবো। রেজাল্ট খারাপ হওয়ার পিছনে তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষার সব বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করতে পারাকেও দায়ী করছেন। ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের জিপিএ দেখে এবং ভালো জিপিএ শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধিদের এবং এলাকার মানুষের চাপ আছে ফলে সম্ভব হচ্ছে না, তারপরও আমরা চেষ্টা করতেছি।