ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শনিবার ৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
ই-পেপার শনিবার ৯ ডিসেম্বর ২০২৩
ব্রেকিং নিউজ: খালেদা জিয়াসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি ২৪ মার্চ       ‘১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করতে আওয়ামী লীগকে ইসির অনুমতি নিতে হবে’       গোপালগঞ্জে ভাবীর লাঠির আঘাত দেবর নিহত      বাগেরহাটে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ২      গাংনীতে র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার ২, ফেন্সিডিল উদ্ধার      সৌদিতে বয়লার বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধা নিহত      




ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, ডাঃ এসকে ঘোষসহ ৪জনের জামিন নামঞ্জুর
হবিগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা
Published : Tuesday, 21 November, 2023 at 6:09 PM

ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ডাক্তার এস কে ঘোষসহ চারজনের জামিন নামঞ্জুর করে আবারও কারাগারে পাঠিয়েছেন আমলি আদালত হবিগঞ্জ  ১ এর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকির হোসেন। মঙ্গলবার ২১ নভেম্বর দুপুর ১টার দিকে ডাঃ এসকে ঘোষসহ চারজনের জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন না মঞ্জুর করে আবারও তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়াও একই সাথে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস,আই,আব্দুল্লাহ আল আজাদ আদালতের কাছে আসামীদের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত পরবর্তীতে রিমান্ড আবেদন করার নির্দেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে রিমান্ড আবেদন করার কথা নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস,আই,আব্দুল্লাহ আল আজাদ।


জানা যায়, ডাঃ এসকে ঘোষের ভুল চিকিৎসায় নিহত রহিমা খাতুন নামের ওই মহিলার ভাতিজা রহমত আলী নামের ব্যক্তির দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে গত ১৪ নভেম্বর উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেন ডাক্তার সহ ওই চার ব্যক্তি। উচ্চ আদালতের বিচারক মোঃ আবু তাহের, মোঃ সাইফুর রহমান ও মোঃ বাশির উল্লাহ ৩ জনের যৌথ বেঞ্চ জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে চারজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন। এরপর আজ ২১ নভেম্বর আবারো হবিগঞ্জের আদালতে ডাঃ সহ অভিযুক্ত চার ব্যক্তি জামিন আবেদন করলে আদালত নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন। 


ডাঃ এস কে ঘোষ ছাড়াও মামলায় অন্য অভিযুক্তরা হলেন দি জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালের মালিক এ কে আরিফুল ইসলাম, ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার জনি আহমেদ এবং একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাবেক মেম্বার কাঞ্চন মিয়ার ছেলে হাবির হোসাইন।



উল্লেখ্য, গত ৯ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে রহিমা খাতুন (৫৫) নামের এক মহিলাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে দালাল তাবির হোসেন নামের এক ব্যক্তি তাদেরকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে নতুন বাস টার্মিনালের দি জাপান হসপিটালে নিয়ে যান। সেখানে যাবার পর কর্তৃপক্ষ বলে রহিমার অবস্থা খুবই খারাপ। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করতে হবে। ওইদিনই ডাক্তার এস কে ঘোষ তার অপারেশন করেন। এরপর তার অবস্থা আরও অবনতি হয়। কয়েকদিন থাকার পর কিছুটা সুস্থ হলে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রিলিজ দেয়া হয়। বাড়িতে নিয়ে যাবার পর তার অবস্থার আরও অবনতি হয়। অপারেশনের স্থান দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে থাকে।


একপর্যায়ে তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। ধরা পড়ে জরায়ু কেটে ফেলা হয়েছে রোগিনীর। তাছাড়া তার পেটের মধ্যে থাকা দুটি টিউমারের বদলে একটি টিউমার অপারেশন করা হয়েছে। আরেকটি রয়ে গেছে। এমনকি তার একটি কিডনিও পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের পর রহিমা গত ১৫ অক্টোবর বিকালের দিকে মারা যান। নিহত নারী হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের বাসিন্দা মৃত নুর আলীর স্ত্রী।


এরপর ডাক্তার এসকে ঘোষসহ দি জাপান বাংলাদেশ হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে কিডনি চুরি সহ নানান অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৩ অক্টোবর সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইউনুছ মিয়ার ছেলে রহমত আলী মৃত মহিলার ভাতিজা আদালতে মামলা দায়ের করেন।


এর এই প্রেক্ষিতে আমলি আদালত ১ এর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকির হোসেন হবিগঞ্জ সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসিকে ডাঃ এস.কে ঘোষসহ ৪জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার রুজু করার নির্দেশ প্রদান করেন। হবিগঞ্জ সদর থানায় নিয়মিত মামলা হওয়ার পর থেকেই অন্যান্য আসামিরা পলাতক থাকলেও গোপনে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ডাক্তার এস কে ঘোষ।

গত ২ নভেম্বর রাত প্রায় ৯টার দিকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে একজন গর্ভবতী মহিলার সিজার করতে প্রস্তুত হচ্ছিলেন। বিষয়টি গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই হাসপাতালে সাংবাদিক উপস্থিত হলে উপস্থিত সাংবাদিকদের ডাঃ এস কে ঘোষ জানান, তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন। জামিনের কাগজ দেখতে চাইলে প্রথমে তিনি বলেন বাসায় রেখে এসেছি। তখন সাংবাদিকরা বলেন ঠিক আছে আপনি অপারেশন শেষ করেন আমরা আপনার বাসায় গিয়ে দেখে আসব। এরপর তিনি বলেন আপনাদেরকে কেন দেখাবো, আপনাদেরকে জামিনের কাগজ দেখাতে আমি বাধ্য নই। তখন সাংবাদিকরা বলেন ঠিক আছে আমাদেরকে না দেখান, পুলিশকে তো দেখাবেন তখন তিনি বলেন ঠিক আছে পুলিশ আসলে দেখাবো। এরপর রোগীকে ওটিতে রেখেই কৌশলে ডাঃ এস কে ঘোষ পালিয়ে যান। এরপর থেকে তিনিও পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। এ বিষয়ে ৫ ই নভেম্বর ডাঃ এস কে ঘোষের মোবাইলে কল দিলে তিনি বলেন আমি এই মুহূর্তে হবিগঞ্জে কোন চিকিৎসা করছি না। হবিগঞ্জের বাহিরে আছি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে তারপরে হবিগঞ্জ আসবো।


এ ঘটনায় গত ৮ নভেম্বর সকাল ৯টার দিকে আদালতের নির্দেশে ২৩ দিন পর নিহত রহিমা বেগম এর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করে আবারো দাফন করা হয়।







সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]