ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শনিবার ৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
ই-পেপার শনিবার ৯ ডিসেম্বর ২০২৩
ব্রেকিং নিউজ: খালেদা জিয়াসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি ২৪ মার্চ       ‘১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করতে আওয়ামী লীগকে ইসির অনুমতি নিতে হবে’       গোপালগঞ্জে ভাবীর লাঠির আঘাত দেবর নিহত      বাগেরহাটে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ২      গাংনীতে র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার ২, ফেন্সিডিল উদ্ধার      সৌদিতে বয়লার বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধা নিহত      




২১ নভেম্বর: সশস্ত্র বাহিনী দিবস
রানা মুসাফির
Published : Tuesday, 21 November, 2023 at 4:28 PM
১৯৭১ সালে ২১ নভেম্বর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় একটি সামরিক বাহিনী গঠিত হয়। এই দিনটিকে সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। এই দিবসটি সাড়স্বরে পালনের জন্য বঙ্গবভন,সামরিক বাহিনীর সদর দফতর,ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এবং দেশের প্রতিটি সামরিক আধা সামরিক প্রতিষ্ঠানে বিচিত্র অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে।

২১শে নভেম্বর ১৯৭১ সালের এই দিনটিতে বাংলাদেশের নৌ,সেনা এবং বিমান বাহিনী যৌথভাবে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে আক্রমন শুরু করে, সেই প্রেক্ষিতে সশস্ত্র বাহিনী হচ্ছে বাংলাদেশের যৌথ সামরিক বাহিনী যা সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত। বাংলাদেশের কোষ্ট গার্ড,বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং অন্যান্য আধাসামরিক বাহিনীগুলো সাধারণ সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকে, কিন্তু যুদ্ধকালীন সময়ে তা এই তিন বাহিনীর অধীনে পরিচালিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটা নিজস্ব পতাকা এবং প্রতীক রয়েছে এতে দৃশ্যমান তিনটি স্তর বিন্যাস রয়েছে। সেটি বাহিনীর তিনটি প্রতীকের সমন্বয়ে একটা প্রতীক । ডানপাশে রয়েছে হালকা সবুজ বৃত্তের উপরে চমৎকার দৃশ্যপটে আঁকা সাদা রঙের শাপলা ফুল, সবুজবৃত্তাকারের বাংলাদেশ,ডানে বামে দুটো-দুটো সমুজ্জ্বল সাদা তারকা,বৃত্তের বেজমেন্টে লেখা বিমান বাহিনী। বৃত্তের নিচে বাইরে চক্ররেখার ভেতরে লেখা-‘বাংলার আকাশ রাখিব মুক্ত’। মূল প্রতীকের বামে তেমনি উপরে লাল বৃত্তের ভেতরে সাদা শাপলা সংযুক্ত নোঙরের ছবি। এটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতীক। যার নিচে শোভা পাচ্ছে- ‘শান্তিতে সংগ্রামে সমুদ্রে দুর্জয়’। সর্বোপরি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লাল প্রচ্ছদের উপরে হলুদ রঙের যুগল তরবারির যুদ্ধংদেহি বীরত্বের ক্রসচিহ্ন। তার উপরে হলুদ শাপলা। এগুলো মূল পতাকার উপরে  মাঝখানে নীল অংশে বসানো। আর ডানপাশে হালকা সবুজ অংশ। বামের অংশ লাল। 

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান কার্যালয় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, ঢাকা সেনানিবাস। এই বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হলেন মহামান্য রাষ্ট্রপ্রতি। দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী হলেন-বাংলাদেশ স্বশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন- পিন্সিপাল স্টাফ অফিসার।

২০১০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সামরিক বাহিনীতে সেবাদান সক্ষম-৩,৬৫,২০,৪৯১ জন যাদের বয়স সীমাঃ ১৯-৪৯। যোগদানের উপযুক্ত পুরুষ -৩,০৪,৮৬,০৮৬ জন, যাদের বয়স-১৯-৪৯। মহিলা-৩,৫৬,১৬০৯৩,যাদের বয়স-১৯-৪৯। ২০২১ সালের এর সক্রিয় কর্মীর সংখ্যা ছিল ৩,০৪,০০০ জন। সংরক্ষিত কর্মীবৃন্দ-৬৩,৯০০ জন। এর ভেতরে জাতিসংঘ মিশনে রয়েছে-৬৪১৭ জন। ২০২১-২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী - এর বাজেট ব্যয় ছিল-৪.৩ বিলিয়ন।


বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরী, বাংলাদেশ অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরী, বঙ্গবন্ধু বৈমানিক সেন্টার এবং খুলনা শিপ ইয়ার্ড সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য,গণচীন এবং অস্ট্রিয়া সহ বিদেশের ১৩টি দেশ এই বাহিনীর সরবরাহকারীদের তালিকাভুক্ত রয়েছে।

সশস্ত্র বাহিনী সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৭১ সালে অনুষ্ঠিত যুদ্ধকে কেন্দ্র করে। সর্বকালের   সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে এই সশস্ত্র বাহিনী জনসাধারণের সাথে কাঁধে কাঁধ  মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। প্রাথমিক  যুদ্ধকালে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ফোর্সেস গঠন করা হয়। এর অধীনে গঠিত হয়  বিভিন্ন সেক্টর। এর সাথে যুক্ত হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা  মুক্তিযোদ্ধাদের বহর। শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণসহ গেরিলা যুদ্ধের কৌশল প্রণয়ন।

বিদ্রোহী বাঙালি,সেনা,নৌ ও বিমানবাহিনী সদস্য,ইপিআর,পুলিশ,আনসার,মুজাহিদ ও নির্বাচিত সাধারণ নেতার সমন্বয়ে গঠিত হয় নিয়মিত বাহিনী বা মুক্তিবাহিনী । এর সাথে   যুক্ত হয় গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য গণবাহিনী। পরে ভারতীয় সেনাদের সংযুক্তি এই মহড়াকে আরো গভীর এবং শক্তিশালী করে তোলে ।

যৌথবাহিনীর এই অভিযান ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সংঘঠিত হয়। সম্মিলিত বাহিনী ( মুক্তিবাহিনী ও মিস্ত্র বাহিনী ) ছিল অপারেশনের ভিত্তিভূমি। যা ১৯৭১ সালে ১৬ই ডিসেম্বর চুড়ান্ত বিজয়ে পরিণত হয়। এসব যুদ্ধ আয়োজন মহড়া কিংবা প্রশিক্ষণ অথবা সংযুক্তি এবং গেরিলা পদ্ধতি ব্যাবহারের যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এই সশস্ত্র বাহিনী প্রধান ভূমিকা পালন করে এসেছে। সেক্ষেত্রে সাতজন বীরশেষ্ঠও পদমর্যাদায় ভূষিত  হয়েছেন-- এই সশস্ত্র বাহিনীর কেন্দ্রীয় ভূমিকাকে কেন্দ্র করে। অন্যান্য পদমাদিয়ার সে যুদ্ধোন্তর সম্মান সেটাও নির্ধারিত হয়েছে-এই সশস্ত্র বাহিনীর অবদানকে কেন্দ্র করে । ফলে আমাদের  মুক্তিযুদ্ধের অর্জন এবং সফলতা,পতাকা,মানচিত্র,অস্তিত্ব এবং গৌরব এদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ফলাফল। আজ ২১ নভেম্বর এই সশস্ত্রবাহিনী দিবসে সমস্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং দেশপ্রেমিক মানুষকে জানাই অন্তরের গভীর শ্রদ্ধা এবং লাল সালাম। সুখী হোক প্রতিবাদী বাঙালী এবং পৃথিবীর মানুষ।

 লেখক: কবি, শিল্পী, লেখক ও উপস্থাপক







সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]